এন্টিবায়োটিক খাচ্ছেন ! অ্যান্টিবায়োটিকের নেতিবাচক দিকগুলো সম্পর্কে জেনে নিন !!
অ্যান্টিবায়োটিক !! অ্যান্টিবায়োটিক হচ্ছে এমন এক ধরনের ওষুধ, যা জীবাণু দ্বারা সৃষ্ট সংক্রমণ প্রতিকারে সহায়তা করে। ব্রংকাইটিস, নিউমোনিয়া ও ইউরিনারি ট্যাক্ট ইনফেকশনের মতো সংক্রামক রোগের চিকিৎসায় অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হয়। অ্যান্টিবায়োটিক সংক্রামক সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া মেরে ফেলে এবং এগুলোর বেড়ে ওঠায় বাধা সৃষ্টি করে।
অ্যান্টিবায়োটিকের বিভিন্ন গোষ্ঠী ও শ্রেণী রয়েছে এবং সবগুলোরই রয়েছে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, যা নারী-পুরুষ উভয়কে একইভাবে প্রভাবিত করে। অনেক অ্যান্টিবায়োটিকই পেটে অস্বস্তি বা অন্যান্য গ্যাস্ট্রোইনটেস্টিনাল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণ, যার ফলে দেখা দিতে পারে বমিভাব বা বমি, ডায়রিয়া, পেটব্যথা ইত্যাদি। ম্যাক্রোলাইড অ্যান্টিবায়োটিক, সেফালোস্পোরিনস, পেনিসিলিন ও ফ্লুরোকুইনওলোনস অন্যান্য অ্যান্টিবায়োটিকের চেয়ে অনেক বেশি এসব সমস্যার উদ্রেক ঘটাতে পারে।
সেক্ষেত্রে ডাক্তারের কাছ থেকে শুনে নিন প্রেসক্রাইব করা অ্যান্টিবায়োটিক খাবারের সঙ্গে খাওয়া যাবে কিনা। কারণ খাবারের সঙ্গে খেলে অ্যামোক্সিলিন ও ডক্সিসাইক্লিন জাতীয় অ্যান্টিবায়োটিকের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কমে। তবে তা সব ধরনের অ্যান্টিবায়োটিকের জন্য প্রযোজ্য নয়। যেমন টেট্রাসাইক্লিন খেতে হয় খালি পেটে। তাই ওষুধ গ্রহণ করার আগে ডাক্তারের কাছ থেকে জেনে নিন কী উপায়ে গ্রহণ করলে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এড়ানো যাবে।
কখন ডাক্তারকে জানাতে হবে : অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়া শেষ হয়ে গেলে ডায়রিয়া এমনিতেই ঠিক হয়ে যায়। কিন্তু ডায়রিয়া যদি গুরুতর হয়, তাহলে হতে পারে পেটব্যথা, জ্বর, বমিভাব, পায়খানার সঙ্গে রক্ত যাওয়া ইত্যাদি। আর এ উপসর্গগুলো তখনই দেখা দেবে, যখন অন্ত্রে ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি ঘটবে। তাই এমন হলে অবশ্যই দেরি না করে ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে।
অ্যান্টিবায়োটিকের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলো হলো—
আলোকসংবেদনশীলতা : টেট্রাসাইক্লিনের মতো অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করলে শরীর ও চোখ অতিরিক্ত আলো সহ্য করতে পারে না। ফলে ত্বক রোদের সংস্পর্শে এলে খুব সহজেই তামাটে বর্ণ ধারণ করে। অবশ্য এ সংবেদনশীলতা চলে যায় ওষুধ সেবন বন্ধ হলে। তাই এ অ্যান্টিবায়োটিক যতদিন চলবে, ততদিন রোদ যেন ত্বকে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে না পারে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
জ্বর : অ্যান্টিবায়োটিকসহ নানা ধরনের ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে জ্বর হতে পারে। আর ল্যাকটামস, সেফেলেক্সিন ও মাইনোসাইক্লিনের মতো অ্যান্টিবায়োটিক সেবনের পর জ্বর আসা সাধারণ ঘটনা। সেক্ষেত্রে এ জ্বর আপনাআপনিই সেরে যায়। কিন্তু ২৪-৪৮ ঘণ্টার মধ্যে যদি শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক না হয়, তাহলে ডাক্তারকে জানাতে হবে।
দাঁতের রঙ নষ্ট হওয়া : টেট্রাসাইক্লিন ও ডক্সিসাইক্লিন অ্যান্টিবায়োটিক শিশুদের দাঁতে স্থায়ী দাগ ফেলে দিতে পারে। যেসব শিশুর বয়স আট বছর বা এর কম, তাদের সাধারণত এ সমস্যাটি দেখা দেয়। তবে গর্ভাবস্থায় এ অ্যান্টিবায়োটিক নিলে গর্ভস্থ শিশুর প্রাথমিক দাঁতে এ দাগ পড়তে পারে। তাই গর্ভকালে এমন ওষুধ গ্রহণের আগে ডাক্তারের কাছ থেকে জেনে নেয়া ভালো, এর কোনো বিকল্প রয়েছে কিনা।
অ্যালার্জি : অ্যান্টিবায়োটিক সেবনের ফলে অ্যালার্জির সমস্যা দেখা দিতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে অ্যালার্জির জন্য আলাদা ওষুধেরও প্রয়োজন হয়। এমন হলে নিঃশ্বাসে সমস্যা, গলা ও জিহ্বা ফুলে যাওয়া ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিতে পারে।

